ভারতের বাঘ এখন আর চোরাশিকারিদের নয়, বরং এক বিপজ্জনক সংকটের মুখে—তাদের স্বাভাবিক শিকার দ্রুত হারে কমে যাচ্ছে। বন উজাড়, গৃহসংঘাত ও বাসস্থানের ক্ষতি মিলিয়ে জাতীয় পশু আজ পড়ছে মানব-বাঘ সংঘর্ষের ঝুঁকিতে। বিস্তারিত জানুন এই লুকিয়ে থাকা হুমকির কথা।
Channel 11 News Desk | ৯ জুন ২০২৫ | বিশেষ প্রতিবেদন
ভারতের বহু বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প সফল হলেও বিপদে পড়েছে বাঘদের খাবার ব্যবস্থা। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি রিপোর্ট জানাচ্ছে—দেশজুড়ে নানা বাঘ সংরক্ষিত অঞ্চলে শিকারজন্তুর সংখ্যা ভয়ঙ্করভাবে কমে যাচ্ছে। যার ফলে বাঘের স্বাভাবিক জীবনচক্র, প্রজনন ও আবাসস্থলে বড়সড় প্রভাব পড়ছে।
কী বলছে গবেষণা?
২০১৪ থেকে ২০২২—এই আট বছরে চিতল, সাম্বর ও গর-এর মতো বড় শিকারজন্তুর সংখ্যা গড়ে ২৫–৩০ শতাংশ কমে গেছে।
এই পতনের পেছনে তিনটি বড় কারণ রয়েছে:
1. বন উচ্ছেদ ও বৃক্ষচ্ছেদ
2. অবৈধ শিকার ও পাচার
3. স্থানীয় সহিংসতা ও অসামাজিক কার্যকলাপ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউনগিউলেট নামক এই শিকারজন্তুগুলি না থাকলে বাঘদের খাদ্য চক্র ভেঙে পড়ে। ফলে তারা ছোট পশু বা মানুষের গৃহপালিত পশুর উপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়, এবং সেখান থেকেই শুরু হয় মানব–বাঘ সংঘর্ষ।
কোন কোন অঞ্চল সবচেয়ে বিপদে?
পলমাউ, ঝাড়খন্ড, সিমলিপাল, ওড়িশা, তাডোবা, মহারাষ্ট্র, ভলমিকি, বিহার ও ইউপি
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
১ বর্গ কিমি-তে ৩০টির বেশি শিকারজন্তু থাকলে তবেই সেখানে ৪টি বাঘ টিকতে পারে।
কিন্তু ৭৫টি সংরক্ষিত অঞ্চলের ২৮% এলাকায় এই সংখ্যা এখন ১৫-এরও নিচে।
এই শিকারজন্তু হারানো মানেই বাঘ হারানোর পূর্বাভাস।
বিশেষজ্ঞ মতামত
ডঃ কুশল ভাটনাগর, বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ গবেষক বলেন:
“বাঘ বাঁচাতে হলে শুধু বাঘ রক্ষা নয়, তাকে ঘিরে থাকা ইকোসিস্টেম—বিশেষত তার শিকার প্রাণীদেরও রক্ষা করতে হবে।”
কী হতে পারে ফলাফল?
বাঘেরা বন থেকে লোকালয়ে চলে আসবে
গৃহপালিত পশুর ওপর আক্রমণ বাড়বে
বন বিভাগ ও গ্রামবাসীর মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়বে
শেষপর্যন্ত বাঘ মারার ঘটনা বাড়বে
