অপহরণ, নির্যাতন, অবহেলা: কলকাতার তরুণীর দুঃসহ যন্ত্রণার নীরব সাক্ষী সমাজ ও প্রশাসন

 কলকাতার ২৩ বছরের এক তরুণী মাসের পর মাস ধরে বন্দি ও নির্যাতনের শিকার হন। ফিরে আসার পর তার শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন। পরিবারের অভিযোগ, প্রশাসনের উদাসীনতাই ঘটনার জন্য দায়ী।

নির্যাতনের শিকার তরুণী, পরিবারের পাশে বসে আছেন, চুপচাপ ও আঘাতে জর্জরিত।

Channel 11 |প্রলয় চ্যটার্জ্জী

বন্ধ ঘরের ভিতরে বন্দি, সমাজ চুপ: কলকাতার তরুণীর কাহিনি গা শিউরে ওঠে

কলকাতা, ৮ জুন, ২০২৫ — যে শহর রাতেও ঘুমোয় না, সেখানেই দিনের পর দিন বন্দি ছিলেন এক তরুণী—কেউ জানল না, কেউ দেখল না।

২৩ বছরের এক তরুণী সম্প্রতি ফিরেছেন দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণির বাড়িতে। কিন্তু ফিরে এসে তিনি যা বললেন, তা শোনার মতো সাহস আমাদের কতজনের আছে?

তার শরীরে ছিল অসংখ্য নির্যাতনের দাগ। পরিবারের অভিযোগ, মাসের পর মাস ধরে তিনি ছিলেন অপহৃত, বন্দি এবং প্রতিনিয়ত অত্যাচারের শিকার।


"সে নিখোঁজ ছিল না, সে যেন ভুলে যাওয়া এক নাম।"

তরুণীটি এক যুবকের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন বলে জানা গেছে। পরিবার বলছে, সম্পর্কের শুরু থেকেই শুরু হয়েছিল মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। ধীরে ধীরে তা চরম পর্যায়ে পৌঁছয়—অপহরণ ও বন্দিদশায় ফেলে রাখা হয় তাকে।

পাড়া-প্রতিবেশীরাও জানতেন না তিনি কোথায়। কেউ খোঁজ নেননি। এটা কি শহরের ব্যস্ততার দোষ, না আমাদের অনুভূতির মৃত্যু?

প্রশাসন কি ঘুমিয়ে ছিল?

পরিবার জানায়, প্রথম দিকে পুলিশের কাছে যাওয়া হলেও তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। অভিযোগপত্র গ্রহণের পরেও তদন্ত শুরু করতে সময় লেগেছে।

এখন ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং-এর জন্য। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এতদিন প্রশাসন চুপ কেন ছিল? 

ব্যবস্থা ভেঙে পড়েনি, সেটা কেবল নীরব।

নারী অধিকারের জন্য কাজ করা সংস্থাগুলোর বক্তব্য, এমন ঘটনা বাড়ছে দিনকে দিন। সমাজ আর প্রশাসন চুপ করে থাকে যতক্ষণ না ঘটনা মিডিয়ায় আসে।

সামাজিক সংগঠক রূপা দে বললেন, "আমরা কেবল অপরাধীর সঙ্গে লড়ছি না, একটা নিঃস্পৃহ সিস্টেমের সঙ্গেও লড়ছি।"

এরপর কী?

তরুণীর বাবা-মা অপরাধীর কঠোর শাস্তি চাইছেন। কিন্তু তরুণীর যে মানসিক আঘাত, তা সারতে সময় লাগবে—সময় আর সহানুভূতি।

আমরা কি এই সমাজ চাই, যেখানে কেউ দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হয় আর কেউ টেরও পায় না?


আরও পড়ার জন্য : ডালহৌসির অফিস পাড়া এখন নীরব! 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন