ফরিদাবাদের বল্লভগড় রেলস্টেশনের কাছে ঘটল এক হৃদয়বিদারক ট্র্যাজেডি। এক ব্যক্তি নিজের চার শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন। মর্মান্তিকভাবে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনেরই মৃত্যু ঘটে।
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক রিপোর্ট | চ্যানেল ১১ বাংলা | ফরিদাবাদ ট্র্যাজেডি
ঘটনার স্থান: ফরিদাবাদ, হরিয়ানা
তারিখ: ১১ জুন ২০২৫
সময়: দুপুর প্রায় ১টা
কে ছিলেন ওই ব্যক্তি?
মৃত ব্যক্তির নাম মনোজ মাহাতো (বয়স ৪৫)। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর এবং বিহারের বাসিন্দা। পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন আগে ফরিদাবাদে ভাড়া বাসায় এসে থাকতেন। তার চার সন্তানের বয়স — ৩, ৫, ৯ ও ১০ বছর। প্রত্যেকেই পুত্র সন্তান।
শেষ সকাল: এক স্বাভাবিক ভ্রান্তি
ঘটনার ঠিক আগের দিন সকালে মনোজ নিজের স্ত্রীকে বলেন, তিনি সন্তানদের নিয়ে পার্কে যাচ্ছেন। স্ত্রী কিছু সন্দেহ করেননি। পার্ক নয়, তিনি সন্তানদের নিয়ে চলে যান রেললাইনের পাশে। সেখানে কিছু চিপস, বিস্কুট খাওয়ানোর পর, একসঙ্গে অপেক্ষা করতে থাকেন ট্রেন আসার জন্য।
দুপুর ১২:৫৫ নাগাদ গোল্ডেন টেম্পল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছুটে আসে। স্থানীয়রা জানান, ট্রেন চালক জোরে হর্ন বাজান, কিন্তু মনোজ ও সন্তানরা নড়েননি। মুহূর্তেই ট্রেনটি তাঁদের উপর দিয়ে চলে যায়।
কি কারণ দেখছে পুলিশ?
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে মনোজ তাঁর স্ত্রীর উপর সন্দেহ করতেন। তিনি ভাবতেন স্ত্রী অন্য এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এই মানসিক অবসাদ ও সন্দেহই হয়তো তাঁকে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।
মনোজের পকেটে পাওয়া যায় একটি চিরকুট, যেখানে স্ত্রী ও সন্তানদের নাম এবং স্ত্রীর মোবাইল নম্বর লেখা ছিল। এটি থেকেই পুলিশের ধারণা, তিনি আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেই এসেছিলেন।
পুলিশি পদক্ষেপ:
ঘটনাস্থলে ফরিদাবাদ জিআরপি (GRP) এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থানীয়দের বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মৃতদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদাবাদ সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আত্মীয়-পরিজনদের খবর দেওয়া হয়েছে।
সমাজের প্রশ্ন:
এই ঘটনা ফের একবার তুলে ধরল—পরিবারের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং হতাশা মোকাবেলার প্রয়োজনে আমরা কতটা পিছিয়ে আছি। চারটি নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু আমাদের সকলের বিবেককে নাড়া দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
Channel 11-এর বার্তা:
আমরা এই শোকগাথা ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। সমাজকে আরও সচেতন হতে হবে—বিশ্বাসের অভাব ও দাম্পত্য জীবনের মানসিক চাপ যদি সময়মতো চিহ্নিত না হয়, তার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা আজকের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
