'ট্রোজান হর্স' দিয়ে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা, কিন্তু কতটা নিরাপদ এই পদ্ধতি?

 নেদারল্যান্ডসে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসায় 'ট্রোজান হর্স' পদ্ধতি ব্যবহার শুরু। সত্যিই কি এটি যুগান্তকারী, নাকি লুকিয়ে আছে কোনো ঝুঁকি?

'ট্রোজান হর্স' থেরাপি দিয়ে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা শুরু — নেদারল্যান্ডস বিশ্বে প্রথম


চ্যানেল ১১ বাংলা | স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান | ১৪ জুন, ২০২৫


ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকেমিয়ার চিকিৎসায় এবার এক নতুন যুগের সূচনা করল নেদারল্যান্ডস। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে তারা 'ট্রোজান হর্স' পদ্ধতিতে তৈরি জিন থেরাপি ব্যবহার শুরু করেছে মানুষের ওপর।

Microscopic view of modified cells attacking blood cancer with Trojan Horse gene therapy in clinical use in Netherlands.

এই পদ্ধতিটি এমন এক বিজ্ঞান-ভিত্তিক চিকিৎসা যেখানে জেনেটিকালি তৈরি কৃত্রিম কোষ ক্যান্সারের কোষগুলিতে ঢুকে পরে ভিতর থেকে ধ্বংস করে দেয়।

 কী এই ট্রোজান হর্স থেরাপি?

গ্রিক পুরাণের বিখ্যাত ট্রোজান হর্স-এর অনুপ্রেরণায়, এই চিকিৎসায় mRNA থেরাপি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা শুধু ক্যান্সার কোষে ঢুকলে তবেই সক্রিয় হয়।

এর ফলে শরীরের সুস্থ কোষগুলির ক্ষতি হয় না, যা সাধারণ কেমোথেরাপির বড় একটি সমস্যা।

 কাজ করার পদ্ধতি: সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

১. ক্যান্সার শনাক্তকারী mRNA ডিভাইস প্রস্তুত করা হয়।

২. এটি এক বিশেষ ‘ন্যানো-ক্যারিয়ারে’ করে শরীরে ঢোকানো হয়।

৩. ক্যান্সার কোষে পৌঁছলে mRNA সক্রিয় হয়।

৪. সক্রিয় হয়ে তা ক্যান্সার কোষের ভিতরে বিষাক্ত প্রোটিন তৈরি করে, যা কোষটিকে ধ্বংস করে।

 কী আশঙ্কা রয়েছে?

চিকিৎসাটি যুগান্তকারী হলেও কয়েকটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে:

  • দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখনো জানা যায়নি।
  • সব ধরনের ব্লাড ক্যান্সারে এটি কার্যকর নাও হতে পারে।
  • ইমিউন সিস্টেমে বিভ্রান্তি ঘটলে সুস্থ কোষও আক্রান্ত হতে পারে।

বর্তমানে এটি ফেজ-২ ট্রায়ালে আছে এবং অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিতভাবে কয়েকজন রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে।

 নেদারল্যান্ডসই কেন প্রথম?

বহু বছরের গবেষণার পর নেদারল্যান্ডস সরকার অনুমতি দিয়েছে এই ‘কমপ্যাশনেট ইউজ’ এর। উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং গবেষণার সুবিধার জন্য তারা এই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত।

 বিশেষজ্ঞের মতামত

 “এই চিকিৎসা আমাদের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নতুন দিশা দেখাবে,” বললেন গবেষক ডঃ উইলেম বসমান।

“কিন্তু এখনো এটা ম্যাজিক নয়। ধীরে, বিজ্ঞানসম্মত পথে এগোতে হবে।”

 উপসংহার

‘ট্রোজান হর্স’ থেরাপি হয়তো লিউকেমিয়ার চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। তবে তা কতটা নিরাপদ ও কার্যকর, তা প্রমাণ করবে সময়।

আরও পড়ুন: রক্ত সংকট আরও ভয়াবহ? এবার ভরসা কৃত্রিম রক্তেই!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন